হামহাম ঝর্ণা - হিডেন বিউটি অফ বাংলাদেশ

হামহাম ঝর্ণা - হিডেন বিউটি অফ বাংলাদেশ

হামহাম ঝর্ণা শ্রীমঙ্গল, মোলভীবাজার ❤

বাংলাদেশে যতগুলা সুন্দর ঝর্ণা আছে হামহাম অন্যতম। আকার আকৃতির দিক থেকেও বিশাল এই ঝর্ণাটি। তবে এই ঝর্ণার মেইন আকর্ষণ হলো ঝিরিপথ। ঝিরিপথের দুই পাশের অসংখ্য বাঁশঝাড়ের মধ্যে যখন সূর্যের আলোকরশ্মি গলে পড়ে তখন এক রোমাঞ্চকর পরিবেশ তৈরি হয়।ট্রেইলে ছোট বড় অংসখ্যা গর্ত আছে,তাই ঝিরিপথের পাশ দিয়ে হাটাচলা করলে সুবিধা হয়। আর আরেকটি সমস্যা হলো ঝিরিপথে অনেকগুলা বাশের খুটি পড়ে আছে,পানির নিচে হওয়ায় সেগুলা চোখে পড়বে না। তাই হাটার সময় খুব সাবধানে হাটতে হবে,আর অন্যমনষ্ক হওয়া যাবেনা। একটু অসতর্কতা আপনার পুরো ট্যুরটাকে নষ্ট করে দিতে পারে।অনেকেই বলছে হামহাম নাকি দুর্গম,,কিন্তু আমার কাছে মোটেও তাই মনে হয়নি। যারা ভালো ট্রেকিং করতে পারে তাদের কাছে ১ ঘন্টায় পৌছানো যায়।ইভেন আমাদের গ্রুপের আমি আর এক আপু আসার সময় ১ ঘন্টায় চলে আসছিলাম। তবে বৃষ্টি হলে সেটা অন্য ব্যাপার।কলাপাড়া থেকে হামহাম বেশি হলে দুই ঘন্টার দুরত্ব। আর দুই ঘন্টার মাঝে ঝিরিপথ পড়বে ১৫ মিনিটের,বাকিটা পথ পাহাড়ের উঁচুনিচু রাস্তা দিয়েই হাটতে হবে। যদি বৃষ্টি না হয় তাহলে ট্রেকিং করতে খুব ইজি,আর চার পাশের প্রকৃতি ও খুব সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারবেন। আর বৃষ্টি হলে রাস্তাটা অনেক পিচ্ছিল হয়ে যাবে,আর সব থেকে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে জোক। প্রায় সবাইকেই বলতে শুনছি হামহামে গেছে কিন্তু জোক ধরে নাই এমন মানুষ খুব কম ই পাওয়া যাবে। আমাদের লাক ভালো ছিলো, আমরা যাওয়ার সময় বৃষ্টি ছিলো না। আর আমাদের আগে অনেকগুলা গ্রুপ গেছিলো,ট্রেইলের সব জোক ওদেরকেই ধরে ফেলছে। ট্রেইলে পড়ে থাকা লবণ,রক্ত দেখেই বুঝে নিয়েছি। হামহামে সবথেকে বেশি খারাপ লেগেছে যেটা দেখে তা হলো পুরো ট্রেইল জুড়ে পড়ে ছিলো প্লাসটিকের বোতল, চিপসের প্যাকেটে ভরপুর। মানুষ যে কতটা নীচু মনের হতে পারে তা হামহামে গেলেই বুঝতে পারবেন। কয়েকজন সেম্পু,সাবান দিয়ে গোসল করতেছিল,তারা প্যাকেটগুলা ঝিরিতেই ফেলে দিছে। আমরা যখন বললাম ভাই আপনারা প্যাকেট গুলা ঝিরিতে না ফেলে ব্যাগে করেই ত নিয়ে যেতে পারতেন। তখন ওনারা আমাদেরকে জ্ঞান দেওয়া শুরু করছে,পারলে আমাদেরকে মারবে এমন অবস্থা।হামহামে কিছু জিনিস বাধ্যতামূলক নিতে হবে।
১/ ট্রেকিং জোতাঃ বৃষ্টির সময় পাহাড়ি রাস্তা প্রচুর পিচ্চিল থাকে, তাই ভালো গ্রিপ জুতা হলে বেস্ট হবে! এতে স্লিপ ও কাটবে না আর ঝিরিতেও আরামছে হাটতে পারবেন।
২/ পানিঃ এই ট্রেইলে কোথাও পানি পাওয়ার সম্ভাবনা নাই,তাই সবাই ব্যাগে ছোট বোতল নিয়ে গেলে বেস্ট হবে।
৩/ লবণঃ বৃষ্টি হলে জোকের শিকার হবেন কনফার্ম,আর জোকের জন্য লবণ হলো বেস্ট।আপনি যদি টেনে জোক ছাড়াতে চান তাইলে রক্তপাত বন্ধ হবেনা।তাই লবণ দিলে খুব সহজেই জোক পড়ে যাবে।

sylhet tour

যেভাবে যাবেনঃ দেশের যে কোন প্রান্ত থেকে প্রথমে শ্রীমঙ্গল আসবেন, তারপর সেখান থেকে জীপ অথবা সিএনজি করে আসতে হবে কলাপাড়া। জীপ ২৫০০-৪০০০ যার থেকে যত রাখতে পারে। কলাপাড়া থেকে ২-২.৩০ ঘন্টা লাগবে হামহামে যেতে। হামহাম দেখে যদি আপনাদের হাতে সময় থাকে তাইলে মাধবপুর লেক,লাওয়াছড়া,নীলকন্ঠ দেখে আসতে পারেন। যদি ঢাকা থেকে ৮-১০ জনের গ্রুপ করে যান তাইলে ১৫০০ টাকা দিয়েও ঘুরে আসতে পারবেন।
আর হ্যা অবশ্যই অফ ডে ছাড়া যাওয়ার চেষ্টা করবেন, তানাহলে মানুষের জন্য ঝর্নার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন না। গতকালকে কমপক্ষে ৩০০-৪০০ মানুষ ছিলো।
হামহামে গেলে অন্তত প্লাস্টিকের বোতল, চিপসের প্যাকেট ফেলে আসবেন না। আমাদের দেশের সম্পদ রক্ষা করা দায়িত্ব আমাদের।
হ্যাপি ট্রাভেলিং

হাম হাম সম্পর্কে মতামত বা অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন আর সর্বোচ্চ সংখ্যক রিভিউ দাতা হিসেবে জিতে নিন একটি জার্সি/টি-শার্ট ঃ  হাম হাম সিলেট  রিভিউ পেজ

Upcoming blog on: ham ham sylhet, lawachara national park, madhabpur lake and sreemangal.  

লেখক পরিচিতিঃ 

রনি ভূইয়াঁ, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি, চিটাগাং

 

দেখুন ৯০০ টাকায় ৫ জন আরামে কিভাবে খাবেন? @ কাচ্চি ভাই বিরিয়ানি | Kacchi Bhai in Bashundhara R/A | Best Biryani in Dhaka


আরো পড়ুন ঃ এক নজরে শ্রীমঙ্গল ট্যুর II BEST OF SREEMANGAL ON A SINGLE DAY

 

Related Posts


Recent Posts


Categories


Tags