ভারতীয় ভিসার আদ্যপান্ত। সকল প্রশ্নের উত্তর এখানে!

ভারতীয় ভিসার আদ্যপান্ত। সকল প্রশ্নের উত্তর এখানে!

ভারত এখন বাংলাদেশীদের জনপ্রিয় ভ্রমণস্থান গুলোর মধ্যে একটি যাতায়াতে কম খরচ এবং সেই সাথে সহজে ভিসা প্রাপ্তির কারণে এখন বছরে কয়েক লাখ বাংলাদেশই ভারতে ভ্রমণ করছেন এবং এই সংখ্যাটি ক্রমেই বাড়ছে । ভিসা প্রাপ্তি সহজ হওয়ার পরেও অনেকে ভিসা পায়নাএর অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে সঠিক ভাবে আবেদন না করা এবং জাল ডকুমেন্ট দেওয়া । এখানে আমি আমার নিজের ভিসা অভিজ্ঞতা শেয়ার করব। আশা করি এই প্রসেস ফলো করলে আপনার ভিসা প্রাপ্তির সম্ভাবনা অনেকটাই বেড়ে যাবে

indian visa

আমি এখন পর্যন্ত দুইবার আবেদন করে দুইবারই ভিসা পেয়েছি। প্রথমবার আবেদন করার সময় আমার ধারনা ছিল যে ভিসা পাবনাএর অন্যতম কারণ ছিল আমার ন্যাশনাল আইডি কার্ড এর নামের বানান এবং পাসপোর্ট এ নামের বানান সেম ছিলনা তারপরও সব ডকুমেন্ট ঠিক থাকায় শেষ পর্যন্ত ভিসা পেয়েছি

টুরিস্ট ভিসার আবেদন করার জন্য নিম্নলিখিত ডকুমেন্ট গুলি লাগবে । প্রসঙ্গত আমি একজন বেসরকারি চাকুরীজীবী এবং সে হিসেবেই আমার ডকুমেন্ট গুলি সাজিয়েছিলাম। এটি খুবই গুরুত্বপুর্ন বিষয় যে আপনার ডকুমেন্ট গুলি অবশ্যই নিম্ন বর্নিত সিরিয়াল অনুযায়ী থাকতে হবে । এখানে আমি যে ডকুমেন্ট গুলি ব্যাবহার করেছিলাম শুধু তার বর্ননা দেওয়া আছে

১। ভিসা এপ্লিকেশন ফর্ম

২। ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি

৩। ইউটিলিটি বিল

৪। ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট

৫। অফিস আইডি কার্ড এর ফটোকপি

৬। এন ও সি

৭। পাসপোর্ট এর ফটোকপি

১। ভিসা এপ্লিকেশন ফর্ম

প্রথমেই আপনাকে IVAC এর ওয়েবসাইট এ যেয়ে অনলাইন আপ্লিকেশন ফর্ম পুরন করতে হবে। ফর্ম পুরণ করতে হবে এই লিঙ্কঃ

http://www.ivacbd.com/FILLING-UP-ONLINE-VISA-APPLICATION

ফর্ম পুরন করার সময় নিচের বিষয়গুলি অবশ্যই খেয়াল করতে হবেঃ

  • ফর্মে পুরন করা বাসার ঠিকানা এবং ইউটিলিটি বিলে উল্লিখিত ঠিকানা অবশ্যই এক হতে হবে। সুতরাং ফর্ম পুরণ করার সময় ইউটিলিটি বিলের একটি কপি হাতে নিয়ে বসুন এবং দাড়িকমা সহ হুবহু ঠিকানা লিখুন । মনে রখুন যে বিলে উল্লিখিত ঠিকানা অসম্পুর্ন বা আজগুবি মনে হলেও যা লেখা আছে ফর্মে সেটিই লিখুন
  • অনলাইন এপ্লিকেশন এ যে ছবিটি আপলোড করবেন পরবর্তীতে আপনাকে সেই ছবিটিই প্রিন্টেড ফর্মে আঠা দিয়ে লাগাতে হবে । ছবি আলাদা হলে আপনার এপ্লিকেশন জমা নিবেনা
  • ওয়েব ফাইল নাম্বারটি সেভ করে রাখুন
  • ভারতে অবস্থানের ঠিকানার যায়গায় আপনি যে কোন একটি হোটেল এর ঠিকানা এবং ফোন নাম্বার ব্যাভার করতে পারেন

এপ্লিকেশন পুরন করা হয়ে গেলে প্রিন্ট করুন । এরপর নিচের লিঙ্ক এ যেয়ে পেমেন্ট করতে পারেন ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেঃ

https://payment.ivacbd.com/

ভিসা ফি ৮০০ টাকা এর সাথে ভ্যাট প্রযজ্য

২। ন্যাশনাল আইডি কার্ডের ফটোকপি

ন্যাশনাল আইডি কার্ডের দুই পাশের ফটোকপি লাগবে এক পৃষ্ঠাই

৩। ইউটিলিটি বিল

আমি ইউটিলিটি বিল হিসেবে বিদ্যূত বিল ব্যবহার করেছিলাম । বিদ্যুৎ বিল অবশ্যই আবেদন করার ছয় মাসর ভিতরের তে হবে । আপনি ফটোকপি জমা দিতে পারেন। আমি একবার ফটোকপি এবং একবার অরিজিনাল কপি জমা দিয়েছিলাম। দুইবার ই ভিসা পেয়েছি

৪। ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট

আবেদন করার সময় পুর্ববর্তি ছয়মাসের ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট লাগবে । অনলাইন স্টেটমেন্ট গ্রহনযোগ্য না । ব্যাঙ্ক যেয়ে ব্যাঙ্কের সীল সহ স্টেটমেন্ট নিতে হবে । স্টেটমেন্ট জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে অরিজিনাল কপি জমা দেয়াই ভাল তবে আমি একবার ফটোকপি এবং একবার অরিজিনাল কপি জমা দিয়েছিলাম

৫। অফিস আইডি কার্ড এর ফটোকপি

যদিও IVAC ওয়েবসাইট তে অফিস আইডি কার্ড এর উল্লেখ নেই তারপরও দেয়া ভাল

৬। এন ও সি

অফিস থেকে অবশ্যই অফিসিয়াল লেটার প্যাডে এন ও সি নো অবজেকশন সার্টিফিকেট নিতে হবে )এন ও সি আপনার অফিসের এডমিনের কাছ থেকে নিতে পারেন অথবা আপনার বসের কাছ থেকেও নিতে পারেন। আমি অফিসিয়াল লেটার প্যাডে নিজে প্রিন্ট করে আমার বসের সাইন নিয়েছিলাম

৭। পাসপোর্ট এর ফটোকপি

সবশেষে যোগ করবেন আপনার পাসপোর্ট এর বায়োগ্রাফি পেজ এর ফটোকপি

সব ডকুমেন্ট রেডি করার পর ক্রমানুযায়ী সাজিয়ে চলে যাবেন যমুনা ফিউচার পার্কের ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টার এ । নতুন এ সেন্টারটি হওয়ার পর লাইনে দাড়িয়ে থাকার সময় অনেকটাই কমে গেছে। সেন্টার এ যাওয়ার পর বিশাল লাইন দেখলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই । যতলম্বা লাইনই হোক না কেন আপনার সকল প্রসেস শেষ করতে ২ থেকে ২.৫ ঘন্টার বেশি লাগবেনা। আমি ১১.১৫ তে লাইনে দাড়িয়েছিলাম .১০ এর মধ্যে সব কাজ শেষ হয়ে গিয়েছিল

*** আপনার পুরানো পাসপোর্ট থেকে থাকলে অবশ্যই বর্তমান পাসপোর্ট এর সাথে সংযুক্ত করে দিবেন না হলে ভিসা পাবেননা

FAQ

১। আমাকে ডেলিভারি ডেট দেওয়া ছিল ১২ এপ্রিল কিন্তু আমি ৯ এপ্রিল পাসপোর্ট কালেকশন এর মেসেজ পেয়েছি । আমি কি ১২ তারিখের আগে যেয়ে পাসপোর্ট আনতে পারব ?

  • না। মেসেজ এ লিখা থাকে যে “On or After Delivery Date” . সুতরাং আগে মেসেজ পেলেও ডেলিভারি ডেট যেদিন দেয়া আছে ওই দিন যেয়েই কালেক্ট করতে হবে

২। আমি কি আমার স্পাউস এর এপ্লিকেশন জমা দিতে পারব ?

  • জী পারবেন

৩। ভিসাতে আমার পোর্ট দেয়া আছে ডাউকি । আমি কি চ্যাংড়াবান্ধা দিয়ে যেতে পারব ?

  • নাপারবেনা । আপনার ভিসা উল্লিখিত পোর্ত ব্যাতিত আপনি শুধু গেদে (বাই রোড,বাই রেলবেনাপোল (বাই রোডএবং বাই এয়ারে যেতে পারবেন

৪। আবেদন করার কতদিনের ভিতর ফর্ম জমা দিতে হবে ?

  • ৮ দিনের মধ্যে

আশা করি লেখাটি সবার কাজে লাগবে । আপনার যে কোন প্রশ্ন যানাতে পারেন কমেন্টে

হ্যাপি ট্রাভেলিং !!!

যদি ইন্ডিয়ান ভিসা এপ্লিকেশন সেন্টার এর সার্ভিস আপনাদের ভাল লেগে থাকে তাহলে আপনার রিভিয় শেয়ার করতে পারেন নিচের লিঙ্ক এ !

https://www.reviewbangla.com/bn/business/indian-visa-application-center-ivac-dhaka/

লেখক পরিচিতিঃ 

ইশতিয়াক আহমেদ তমাল

Related Posts


Recent Posts


Categories


Tags